রেচনতন্ত্র Human Excretory System

মানুষের রেচনতন্ত্র (Human Excretory System)

রেচন পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য মানবদেহে একটিমাত্র সুনির্দিষ্ট তন্ত্র রয়েছে যা রেচনতন্ত্র নামে পরিচিত। এর মাধ্যমেই শতকরা ৮০ ভাগ রেচন পদার্থ নিষ্কাশিত হয়। বাকি ২০ ভাগ রেচন পদার্থ বিভিন্ন ক্রিয়াকর্মে উৎপন্ন ও বিভিন্ন অঙ্গের মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়। এসব অঙ্গ সহকারী রেচন অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।

মানুষের রেচনতন্ত্র-একজোড়া বৃক্ক, একজোড়া ইউরেটার,একটি মূত্রথলি ও একটি মূত্রনালি নিয়ে গঠিত।

১. বৃক্ক (Kidney): বক্ষপিঞ্জরের ঠিক নিচে উদর গহবরের কটি অর্থাৎ কোমর অঞ্চল (lumbar region)-এ মেরুদণ্ডের দুপাশে একটি করে মোট দুটি বৃক্ক থাকে। বৃক্কের উপরের প্রান্ত দ্বাদশ থোরাসিক কশেরুকার নিচে এবং নিচের প্রান্ত তৃতীয় লাম্বার কশেরুকার উপরে অবস্থিত। উদর গহ্বরে যকৃতের অবস্থানের কারণে বাম বৃক্কটি ডান বৃক্কের তুলনায় সামান্য উপরে অবস্থিত। বৃত্ত দেখতে অনেকটা শিম বীজের মতো। এর পার্শ্বদেশ উত্তল, ভিতরের দিক অবতল।

২.রেচন নালি বা ইউরেটার (Ureter): বৃত্তের পেলভিস থেকে সৃষ্টি হয়ে পৃষ্ঠউদরীয় প্রাচীর ঘেঁষে পশ্চাৎভাগে অগ্রসর হয়ে যে নালি মূত্রথলিতে উন্মুক্ত হয়েছে তাকে ইউরেটার বলে। প্রত্যেকটি নালি দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৫ সেন্টিমিটার। এ নালি বৃক্ক থেকে মূত্রথলিতে মূত্র পরিবহন করে।

৩. মুত্রথলি (Urinary bladder): মূত্রথলি পাতলা প্রাচীরবিশিষ্ট এবং ডেট্রসর (detrusor) নামক অনৈচ্ছিক পেশি দিয়ে গঠিত একটি ত্রিকোণাকার থলি বিশেষ। এটি সংকোচন প্রসারণক্ষম। মূত্রথলি ৭০০-৭৫০ মিলিলিটার মূত্র ধারণ করতে পারে। তবে ২৮০-৩২০ মিলিলিটার মূত্র মূত্রথলিতে জমা হলেই ত্যাগের ইচ্ছা জাগে। মূত্র সাময়িকভাবে ধারণ করা ও সময়ে সময়ে নিষ্কাশন করা এর কাজ।

৪. মূত্রনালি বা ইউরেথ্রা (Urethra): পুরুষে মূত্রথলির পশ্চাৎপ্রান্ত থেকে মূত্রনালি উৎপন্ন হয়ে লিঙ্গের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে শেষ পর্যন্ত একটি ছিদ্রের মাধ্যমে বাইরে উন্মুক্ত। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষে এ নালির দৈর্ঘ্য ১৮-১৯ সেন্টিমিটার। – বলা নারীদেহে মূত্রনালি একটি পৃথক ছিদ্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে উন্মুক্ত এবং এর দৈর্ঘ্য মাত্র ৩.৫-৪ সেন্টিমিটার। মূত্র প্রধানও দেহের বাইরে নিষ্কাশন করা এর প্রধান কাজ। তাছাড়া পুরুষের ইউরেথ্রার মাধ্যমে বীর্য দেহের বাইরে নির্গত হয়।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *